এফ এম সুমন :::
কোন পদ পেতে যাচ্ছেন কক্সবাজারের উন্নয়নের ফেরিওয়ালা সালাহউদ্দিন আহমেদ? ভাইস চেয়ারম্যান নাকি স্থায়ী কমিটির সদস্য, নাকি অন্যকিছু?তা নিয়ে নেতাকর্মী,শুভাকাংখী ও সুশীল সমাজের মধ্যে কানাঘুষার শেষ নেই।কেউ বলছেন ভাইস চেয়ারম্যান আবার কেউ বলছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য তবে তা নির্ভর করছে একান্ত দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপর।তবে দেশের মিডিয়াতে ও বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে এই খবরটি।যদিও বা একেক পত্রিকা একেক রকম ছাপাচ্ছেন।অনলাইন পত্রিকাতে তো কথাই নেই।তবে একটি জায়গায় সবাই একি রকম লিখছেন তা হল সালাহউদ্দিন আহমেদ এর ত্যাগের মুল্যায়ন অবশ্যই করবেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ”সালাউদ্দিন আহমেদ একটি নাম একটি ইতিহাস”তিনি কক্সবাজার জেলার ততকালীন চকরিয়া উপজেলা বর্তমান (পেকুয়া) উপজেলার পেকুয়া সদর ইউনিয়নে সিকদার পাড়া গ্রামে সভ্রান্ত এক মুসলিম বুজুর্গ পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহন করেন।তার পিতার নাম মৌলভী ছাইদুল হক।তার পিতা ততকালীন আমলে ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন।সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রথমে পেকুয়া জিএমসি পরে শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি,চট্রগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি,এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন।পরে তিনি বিসিএস পরিক্ষায় সাফল্যের সাথে উন্নিত হয়ে ততকালীন সরকারের ম্যাজিস্ট্রেট এর দায়িত্ব পালন করেন।সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক পরিচয়:সালাহউদ্দিন আহমেদ জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা কালিন ঐতিহ্যে বাহি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর কেন্টিনে বসে জিয়াউর রহমানের সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গঠন করেন।পরে তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।এর পর তিনি কক্সবাজার ১. আসন থেকে বিপুল ভোটে তিন তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।২০০১ সালে ততকালীন জোট সরকার সালাহউদ্দিন আহমদ কে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে সারা কক্সবাজার জেলা বাসীকে খালেদা জিয়া সম্মানিত করেন।তিনি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী থাকা কালিন কক্সবাজারে উন্নয়নে ভরে দেন।চকরিয়া থেকে আলাদা করে পেকুয়াকে উপজেলা ঘোষণা করেন।তখন সালাহউদ্দিন আহমদ কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।এর পরবর্তী কাউন্সিলে সালাহউদ্দিন আহমদ কে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়।উল্লেখ্য যে সালাহউদ্দিন আহমদ তথাকথিত তত্যাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেফতার হলে তার স্ত্রী এডভোকেট হাসিনা আহমদ কে চকরিয়া পেকুয়ার মানুষ বিপুল ভোটের ব্যাবধানে বিজয়ী করেন।তখন আওয়ামীলীগ মহাজোট সরকার ক্ষমতায় যান বিএনপির বিরোধী দল হয়ে যান।বিএনপি বিরোধী দল থাকা কালীন সালাহউদ্দিন আহমদ দলের প্রয়োজনে অনেক বার ঝুকি নিয়ে মুখপাত্র এর দায়িত্ব পালন করেন।আওয়ামী লীগ সরকার আবারো দ্বিতীয় মেয়াদে ৫ই জানুয়ারি ক্ষমতায় গেলে বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে কঠোর আন্দোলনে নামেন এক সময় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রেজবী আহমদ গ্রেফতার হলে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পড়ে যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদ এর উপর।তখন সারা দেশে অনির্দিষ্ট কালে হরতাল ও অবরোধ চলছিল।সালাউদ্দিন আহমদ তখন দলের নেতা কর্মীদের উজ্জিবিত রাখতে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে অজ্ঞাত স্থান থেকে গনমাধ্যমে ভিডিও বার্তা পাঠাতে থাকেন।তার নির্দেশ মত তখন আন্দোলন চলছিল।কিন্তু ২০১৫ সালের ১০ মার্চ তার জীবনে ও রাজনৈতিক কেরিয়ারে ঘটে ভিন্ন রকম ঘটনা।ঢাকার উত্তরার একটি বাসা থেকে তিনি নিখোঁজ হন।যদিও বা তার পরিবার দাবী করেন আইনশৃঙ্খলা পরিচয়ে তাকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে।তার পর বাংলাদেশ সহ বিশ্বের মিডিয়াতে চলে আসে সালাহউদ্দিন নিখোজের খবর।বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘটে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।যদিও বা তখন সরকারি দলের কয়েকজন মন্ত্রী এমপি দায়ী করেন সালাহউদ্দিন নিজে নিজেই আত্মগোপন হয়ে গেছে।যার সঠিক ব্যাখ্যা এখনো পরিস্কার হয়নি।তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ তার স্বামী কে ফিরে পেতে কখনো হাইকোর্ট কখনো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কখনো বা থানায় ছুটে বেড়িয়েছেন অনায়াসে।বারবার সংবাদ সম্মেলন করে তার স্বামী কে ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।তখন সারাদেশের মানুষ অধির আগ্রহে চেয়ে ছিলেন কোথায় সালাহউদ্দিন? ?অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ৬২ দিনের মাথায় ভারতের মেঘালয়ে তার খোঁজ মিলে।তিনি তার স্ত্রী এডভোকেট হাসিনা আহমদ কে ফোন করে বলেন আমি সালাহউদ্দিন বলছি আমি বেচে আছি দেশবাসীকে খবর টি জানিয়ে দাও আমি মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সাইন্স (মিমহাস) হসপিটালে আছি।এর পর রাজনৈতিক অংগনে স্বস্তির হাওয়া বইতে শুরু করে।তখন থেকে এখনো পর্যন্ত তিনি ভারতে বিচারাধীন মামলায় রয়েছেন।অবৈধ অনুপ্রবেশ কারী হিসেবে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তিনি সেখানে আছেন।তবে সম্প্রতি তিনি মেঘালয় থেকে দিল্লিতে যান এবং তার শরীরে অস্ত্রোপচার করান।এই বর্নাঢ্য রাজনৈতিক ব্যক্তি সালাহউদ্দিন যার জনপ্রিয়তা কক্সবাজারে আকাশ চুম্বি এই নেতা কে হয়তো দেশনেত্রী খালেদা জিয়া তার সঠিক মুল্যায়ন করবেন।তবে একটা কথা না বললে নয় সালাহউদ্দিন আহমদ এর মতো দল প্রিয় ও জনপ্রিয় মানুষ কে নেত্রী পদ দিয়ে অবশ্যই মুল্যায়িত করবেন।ইতিমধ্যেই যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।কক্সবাজার সহ সারা দেশের মানুষ আশা করেন দলের এই অকৃত্রিম বন্ধুকে তার সঠিক মুল্যায়ন করে অতীতের ন্যায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবশ্যই কক্সবাজারবাসিকে সম্মানিত করবেন।সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর রোজা রাখা সিন্নি মানত করা দিনের পর দিন কাদতে থাকা কক্সবাজার সহ দেশের মা বোনের মুখে হাসি ফুটাবেন।
**জন্ম তোমার এই পেকুয়ায় হলাম মোরা ধন্য,
পেকুয়ার মানুষ ভুলে নাই তোমায় তোমার উন্নয়নের জন্য ** —এফ এম সুমন
লেখক
এফ এম সুমন
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
[email protected]
পাঠকের মতামত: